বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি::
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সরগম হয়ে উঠেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা। পৌর শহরসহ পাড়া মহল্লায় এখন চলছে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আলাপ আলোচনা। কোন দল থেকে কে প্রার্থী হচ্ছেন এ নিয়ে চলছে ভোটারদের বিচার বিশ্লেষণ। দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বিভিন্ন দলের অর্ধ ডজনেরও অধিক প্রার্থী। তারা দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা সহ অংশ নিচ্ছেন নানা সমাজিক সেবামূলক কাজে। যে যেখানে পারছেন হাত মেলাচ্ছেন ভোটারদের সাথে। চাইছেন দোয়া আশীর্বাদ।
আগামী মার্চ মাসে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা নির্বাচন কোন দল থেকে কাকে প্রার্থী করলে জয় নিশ্চিত হবে এমন আলোচনা এখন সর্বত্র। সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের জয়-পরাজয় নিয়ে নির্বাচনোত্তর কর্মী সভায় উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক কথা হয়। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ সম্ভাব্য ৩ জন প্রার্থীর নাম চাওয়ায় প্রার্থীরা ছুটছেন দলীয় নেতাদের দ্বারে দ্বারে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতার আলোকে এবার উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলগুলো। বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে কি না- এর উপর নির্ভর করবে জাপা’র নির্বাচনী কৌশল। তবে উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে বিএনপি থেকে এখনো কোন ধরনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে বিভিন্ন দল থেকে মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তারা দলের স্থানীয় নেতা-কর্মী সহ উচ্চ পর্যায়েও যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে রাণীশংকৈল উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সইদুল হক, জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল কাদের, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো: শাহরিয়ার আজম মুন্না ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আবু তাহের (ঠিকাদার), বিএনপি নেতা ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আইনুল হক ও সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান দলীয় মনোনয়ন পেতে কাজ করছেন।
সাবেক উপজেলা চেয়াারম্যান সইদুল হক গত ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে থাকায় তিনি জয়ের মুখ দেখতে পাননি। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওয়ার্কাস পার্টির অধ্যাপক ইয়াসিন আলী নৌকা প্রতীক পাওয়ায় এবং একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে বিজয় চলে যায় বিএনপির ঘরে। সইদুল হক আওয়ামী লীগের দূর্দিনে তরুণদের সাথে নিয়ে দলকে সক্রিয় রাখতে অগ্রণী ভুমিকা পালন করে আসছেন। তিনি উপজেলা পরিষদের প্রার্থী হতে উপজেলার আনাচে কানাচে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, এতিমখানা এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ছুটে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন ধরনের সমাজ সেবামূলক কাজ করছেন। আওয়ামী লীগের অপর নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল কাদেরও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন। আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো: শাহরিয়ার আজম মুন্নাও বসে নেই। গত নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় এবার তিনি প্রার্থী হতে মাঠ ময়দান চষে বেড়াচ্ছেন।
এ উপজেলায় জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আবু তাহের নির্বাচনে অংশ নিতে চান। তিনি উপজেলা ঠিকাদার কল্যাণ সমিতিরও সভাপতি। ঠিকাদারীর পাশাপাশি অসহায় ও দুস্থ মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন তিনি। বসে নেই বিএনপি সমর্থিত সম্ভাব্য প্রার্থীরাও। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি সভাপতি আইনুল হক বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও দরিদ্র জনগোষ্ঠির মাঝে সোলার প্যানেল, শীতবস্ত্র সহ বিভিন্ন অনুদান প্রদান করছেন। বিপদাপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে সময় ক্ষেপণ করেন না তিনি। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রশ্নে বসে নেই। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিএনপির পক্ষে ভূমিকা রাখায় নির্বাচনের কয়েকদিন পুর্বে গ্রেফতার হন। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছি। এ নির্বাচনে দলের অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে আমি নির্বাচনে যাব কি না?